খালেদাকে নিয়ে অপরাজনীতির চেষ্টা করছে বিএনপি

1 min read

খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে বারবার অপরাজনীতির চেষ্টা করছে বিএনপি নেতারা। দলটির অনেকে চেয়েছিলেন, খালেদা জিয়া হাসপাতালে ভর্তি থাকুক। বাকি জীবন হাসপাতালেই কেটে যাক। কিন্তু সুস্থ থাকায় তাকে বাসায় বিশ্রাম নেয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। ফলে হতাশ হয়ে কর্মহীন, দিকভ্রান্ত অবস্থা হয়েছে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ স্থায়ী কমিটির নেতাদের।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য বলেন, ম্যাডাম হাসপাতাল থেকে ফিরে এখন পর্যন্ত আমাদের করণীয় সম্পর্কে কোনো নির্দেশনা দেননি। কাজেই আমরা চুপচাপ বসে আছি।

অন্যদিকে খালেদা জিয়ার বাসায় ফেরার পর বিএনপিতে এখন জেঁকে বসেছে পরিবারতন্ত্র। বিশেষ করে বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ভাই, ছোট ভাইয়ের স্ত্রী, বোন এবং বোনের স্বামী এখন বিএনপির নীতিনির্ধারক বনে গেছেন। এখন তারাই বেগম জিয়াকে বলছেন বিএনপির কী কী করা উচিত, কোন নেতার কি দায়িত্ব পালন করা উচিত ইত্যাদি।

বিএনপিতে দীর্ঘদিন ধরেই পরিবারতন্ত্রের কথা আলোচনা হচ্ছিল। বিশেষ করে বেগম জিয়ার ছেলে তারেক রহমান, খালেদা জিয়ার ভাগ্নে, খালেদা জিয়ার প্রয়াত বড়বোন খুরশিদ জাহান হক, খালেদা জিয়ার ভাই প্রয়াত সাইদ এস্কান্দার- এরাই মূলত বিএনপিতে ক্ষমতাসীন হিসেবে পরিচিত ছিলেন।

কিন্তু বেগম খালেদা জিয়া আটক হবার পর এবং তারেক রহমান লন্ডনে চলে যাওয়ার পর দলের পরিবারতন্ত্রে কিছুটা ভাটা পড়েছিল। সেসময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির নেতৃবৃন্দই বিভিন্ন নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত নিতেন এবং লন্ডন থেকে তারেক রহমানও কিছু কিছু সিদ্ধান্ত দিতেন।

ফলে এর পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তীতে খালেদা জিয়ার মুক্তির ব্যাপারে উদ্যোগ গ্রহণ করেন ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার, ছোট বোন সেলিনা ইসলাম এবং বোনের স্বামী।

কিন্তু বেগম খালেদা জিয়ার পূর্ণাঙ্গ মুক্তির ব্যাপারে বিএনপির এই স্থায়ী কমিটির নেতৃবৃন্দ সীমাহীন ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে বলে বেগম জিয়ার ঘনিষ্ঠরা মনে করেন। বিশেষ করে খালেদা জিয়ার মুক্তির যে তিনটি পথ খোলা ছিল, সেই তিনটি পথেই বিএনপির নেতৃবৃন্দরা দায়িত্বশীল আচরণ করতে পারেননি বলে বেগম জিয়ার পরিবারের ধারণা।

বেগম জিয়ার মুক্তির তিনটি পথের মধ্যে প্রথম পথটি হলো আইনি লড়াই। সেই আইনি লড়াইয়ে বিএনপির আইনজীবীরা এমন সব কর্মকাণ্ড করেছেন যা বটতলার উকিলরাও করে না বলে মন্তব্য করেছেন বেগম জিয়ার পরিবারের একজন সদস্য।

আন্দোলনের মাধ্যমে বেগম জিয়ার মুক্তির বিষয়টিও বিএনপি গুরুত্বের সঙ্গে নেয়নি। কার্যত কোনো আন্দোলনই খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য গড়ে তুলতে পারেননি বিএনপি নেতারা।

আর খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য সরকারের সঙ্গে সমঝোতা করার যে কৌশল, সেই কৌশলও বিএনপি বিশ্বস্ততার সঙ্গে পালন করতে পারেননি। ফলে পরবর্তীতে খালেদা জিয়ার মুক্তির ব্যাপারে উদ্যোগ গ্রহণ করেন ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার, ছোট বোন সেলিনা ইসলাম এবং বোনের স্বামী। এছাড়াও লন্ডন থেকেও খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে প্রয়াত কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান সিঁথিও উদ্যোগ গ্রহণ করেন। এরাই বেগম জিয়াকে মুক্ত করেছেন বলে বিএনপির নেতারাও স্বীকার করেন।

আগামী দিনে বিএনপিতে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ অন্যান্য নেতাদের মর্যাদা এবং অবস্থান আরো খারাপ হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বিএনপির একজন নেতা বলেছেন, নিশ্চয়ই শামীম এস্কান্দারসহ পরিবার সরকারের সঙ্গে সমঝোতার মাধ্যমেই বেগম জিয়াকে মুক্ত করেছেন। সেই সমঝোতা কী শর্তে হয়েছে তা জানি না। খালেদা জিয়ার পরিবার সেটি বিএনপির কাছে প্রকাশ করতেও রাজি নন।

+ There are no comments

Add yours