
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে লবিং করতে নতুন পদক্ষেপ নিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়বাদী দল বিএনপি। বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসনকে হাত করতে বাইডেনেরই এক পুত্রের সঙ্গে বিপুল অর্থের বিনিময়ে নিয়োগ দিতে চাচ্ছে বিএনপির দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
উইকলি ব্লিটজে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বাইডেন প্রশাসনকে বাগে আনতে হান্টার বাইডেনের সঙ্গে চুক্তি করছে বিএনপি। যেখানে হান্টার বাইডেনের কাজ হবে বিএনপির প্রতি মার্কিন প্রশাসনের একটু সদয় মনোভাব তৈরি করা। এর পেছনে বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করতে রাজিও হয়েছে বিএনপি।
সম্প্রতি একটি ইমেইল ফাঁস হওয়ার পর এই তথ্য জানা গেছে বলে জানিয়েছে উইকলি ব্লিটজ। সেখানে নোভা (ছদ্মনাম) নামের ৩৫ বছর বয়সী এক লাটভিয়ান নারীর কথা বলা হয়েছে। যিনি দুবাইয়ে একটি পাবলিক রিলেশন এজেন্সিতে চাকরি করেন। এই কাজের জন্য প্রতি মাসে ৮ হাজার ডলার পান তিনি। নোভা মূলত দুবাইয়ে আসা বিদেশিদের সঙ্গেই কাজ করেন। তার বোন বসবাস করছেন যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানে নোভার বোনের প্রেমিক আবার বেশ কয়েক বছর চাকরি করেছিলেন জো বাইডেনের জারজ সন্তান হান্টার বাইডেনের ফার্মে।
এদিকে নোভা তার গ্রাজুয়েট সম্পন্ন করেন বোস্টন কলেজ থেকে, যেখানে ডেলেওয়ারে তার পিতা-মাতা বাস করেন। নোভার ইউক্রেনীয় এক বন্ধু এস্কোর্ট এজেন্সিতে কাজ করেন, সেই সূত্রে অনেকবার হান্টার বাইডেনের সঙ্গে তার সাক্ষাত হয়েছে। এই ইউক্রেনীয় তরুণী আবার হান্টার বাইডেন ও তার অবৈধ সন্তান নেভি জোয়ানের মা লুন্ডেন রবার্টসের মধ্যেকার সমস্যা মেটানোর দায়িত্ব পালন করছেন। এসব বলার কারণ হলো- হান্টারের সন্তান নেভি জোয়ানকে পরিবারের সদস্য মনে করেন না জো বাইডেন। কেননা ২০১৭ সালে হান্টার বাইডেনের বিধবা স্ত্রী হেইলি বাইডেনের সঙ্গে পরকীয়ায় মেতে ওঠার ফসল হিসেবে জন্ম নেয় নেভি জোয়ান।
ডিএনএ টেস্ট মোতাবেক নেভিও হান্টারের সন্তান। নেভির জন্মের পর লুন্ডেন রবার্টসের সঙ্গে সমঝোতায় যেতে দুবাইয়ে চাকরী করা সেই নারী নোভার ইউক্রেনীয়ান বান্ধবী যিনি এস্কোর্ট সার্ভিস দেন তিনি হান্টারকে পরামর্শ দেন। এভাবেই হান্টারের সঙ্গে তার একটি মধুর সম্পর্ক তৈরি হয়।
আর দুবাইয়ে থাকা নোভার সঙ্গে হান্টার বাইডেনের এই যোগসূত্রতার কথা জানতো তার বোন ও বোনের প্রেমিক। বিএনপির পলাতক ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান যিনি ২০০৭ সাল থেকে লন্ডনে পালিয়ে আছেন তার সহকারী মুশফিক ফজল আনসারী এই তথ্য জেনে হান্টার বাইডেনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। মুশফিক ফজল আনসারী প্রথমে সাহায্য চান উইলিয়াম বি মালিমের কাছে। কিন্তু মালিম রাজি না হওয়ায় অন্য উপায় খোঁজেন মুশফিক।
যুক্তরাষ্ট্রের হোয়াইট হাউসের নথিভুক্ত প্রতিনিধি হওয়ায় মুশফিক ফজল আনসারীর জন্য কাজটা আরও সহজ হয়। ‘জাস্ট নিউজ’ নামে একটি ওয়েবসাইট দিয়ে তিনি হোয়াইট হাউসের প্রতিনিধিত্ব করেন। যে অফিসের কোনো শাখা বাংলাদেশে নেই। তবে ওই পরিচয়পত্র ব্যবহার করে হোয়াইট হাউসে বিএনপির প্রতিনিধিত্ব করেন মুশফিকুল ফজল। শুধু তাই নয় জামায়াতে ইসলামির এজেন্ট হয়েও কাজ করেন। যে উগ্রবাদী সংগঠনের অর্থায়ন করে আল কায়েদা।
পরে দুবাইয়ের সেই পাবলিক রিলেশন এজেন্সির মাধ্যমে নোভার পরিচয় পান মুশফিকুল ফজল আনসারী। সেখান থেকেই তিনি হান্টার বাইডেনের সঙ্গে একটা যোগাযোগ করা শুরু করেন। এরপরই দ্রুতই তিনি তারেক রহমানের কাছে চিঠি পাঠান। নোভার বিশ্বস্ত সহকর্মী মুস্তাফার নির্দেশনা মতো চিঠি লিখেন মুশফিক ফজল।
হান্টার বাইডেনের কাছে বিএনপির একটি চিঠি পৌঁছে দেওয়ার জন্য নোভাকে ৫০ হাজার মার্কিন ডলারের প্রস্তাব দেওয়া হয়। জো বাইডেনকে বিএনপির প্রতি প্রভাবিত করার জন্য প্রতি মাসে ৫০ হাজার মার্কিন ডলারের প্রস্তাব দেওয়া হয়।
এখানেই শেষ নয়, হান্টার বাইডেন এককালীন ৫০ মিলিয়ন অর্থান ৫ কোটি মার্কিন ডলারের প্রস্তাব দিয়েছেন। ওই প্রস্তাবে হান্টার বলেছেন, আগামী ২০২৪ সালের নির্বাচনে বিএনপিকে ক্ষমতায় আনার জন্য সাহায্য করবে যুক্তরাষ্ট্র।
কিন্তু হান্টার বাইডেনের পক্ষ থেকে কেউ একজন নোভাকে জানিয়েছে, হান্টারের স্ট্যান্ডার্ড ফি হলো ৬ সংখ্যা বা ৭ সংখ্যা। তাই বিএনপির দেওয়া টাকার পরিমাণ হান্টারের কাছে গ্রহণযোগ্য না।
সূত্র : সাপ্তাহিক ব্লিটজ